কক্সবাজার ট্রেনের ভাড়া কত

কক্সবাজার, বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন স্থান, এখন ট্রেন সার্ভিসের মাধ্যমে চট্টগ্রাম এবং ঢাকা থেকে সহজে পৌঁছানো সম্ভব। বাংলাদেশ রেলওয়ে কক্সবাজার রুটে আধুনিক ট্রেন সার্ভিস চালু করে, যা এখন ভ্রমণকারীদের জন্য একটি আরামদায়ক এবং সাশ্রয়ী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ট্রেনের ভাড়া, সময়সূচী, এবং টিকিট বুকিং প্রসেস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এখানে দেয়া হলো।

কক্সবাজার ট্রেনের ভাড়া

কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম এবং ঢাকা রুটে ট্রেনের শোভন, স্নিগ্ধা, এবং এসি সিট/বার্থের জন্য ভাড়া ভিন্ন। ভাড়া আপনার আসন শ্রেণী ও যাত্রার রুট অনুসারে পরিবর্তিত হয়।

কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম:

ট্রেন সার্ভিসশোভন / স্নিগ্ধা / এসি ভাড়া
কক্সবাজার এক্সপ্রেস (813)৳৬৯৫ / ৳১,৩২৫ / ৳১,৫৯০
পর্যটক এক্সপ্রেস (815)৳৬৯৫ / ৳১,৩২৫ / ৳১,৫৯০

ক্সবাজার থেকে ঢাকা:

ট্রেন সার্ভিসশোভন / স্নিগ্ধা / এসি ভাড়া
কক্সবাজার এক্সপ্রেস (813)৳৫৫০ / ৳১,০২৫ / ৳১,৫৯০
পর্যটক এক্সপ্রেস (815)৳৫৫০ / ৳১,০২৫ / ৳১,৫৯০

কক্সবাজার টু চট্টগ্রাম ট্রেনের টিকিট কেনার উপায়

১. ওয়েবসাইট:

  • বাংলাদেশ রেলওয়ে’র অফিসিয়াল ওয়েবসাইট www.railway.gov.bd থেকে টিকিট বুকিং করা যেতে পারে।
  • অনলাইন টিকিট কেনার জন্য আপনাকে একাউন্ট তৈরি করতে হবে এবং পেমেন্ট সম্পন্ন করতে হবে।

২. মোবাইল অ্যাপ:

  • Rail Sheba নামের একটি অ্যাপ রয়েছে যার মাধ্যমে আপনি ট্রেনের টিকিট সহজে বুক করতে পারবেন। এটি মোবাইল ফোনে ব্যবহারযোগ্য।

৩. রেলস্টেশন:

  • কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, এবং ঢাকা স্টেশনগুলোতে সরাসরি টিকিট কাটা যায়। টিকিট কাউন্টার থেকে সিট বুকিং করতে পারবেন।

সাপ্তাহিক বন্ধ এবং ট্রেনের সেবা

কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম রুটে ২টি ট্রেন রয়েছে, তবে তাদের সাপ্তাহিক বন্ধের দিন ভিন্ন।

  • কক্সবাজার এক্সপ্রেস (813): সপ্তাহের মঙ্গলবার বন্ধ থাকে।
  • পর্যটক এক্সপ্রেস (815): সপ্তাহের রবিবার বন্ধ থাকে।

এটি মনে রেখে, আপনি যদি এই দিনগুলোতে যাত্রা করতে চান তবে আপনাকে অন্য কোন ট্রেন বা বাহন ব্যবহার করতে হবে।

আসন শ্রেণী

কক্সবাজারের ট্রেন সার্ভিসে ৩ ধরনের আসন শ্রেণী পাওয়া যায়:

  1. শোভন (Non-AC): সাধারণ, বাজেট ফ্রেন্ডলি।
  2. স্নিগ্ধা (Semi-AC): আধা-এসি সিট, আরও আরামদায়ক।
  3. এসি সিট / এসি বার্থ: পুরোপুরি এসি, শীতল ও আরামদায়ক।

ভাড়া:

  • শোভন: ৳৬৯৫ / ৳৫৫০ (ঢাকা)
  • স্নিগ্ধা: ৳১,৩২৫ / ৳১,০২৫ (ঢাকা)
  • এসি: ৳১,৫৯০ / ৳১,৫৯০ (ঢাকা)

ট্রেনে ভ্রমণের সুবিধা

  • তুলনামূলকভাবে কম খরচে দীর্ঘ যাত্রা
  • আরামদায়ক আসন ও ঘুমানোর সুযোগ (AC বার্থ)
  • প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করার সুযোগ
  • রাস্তার ভিড় বা ঝামেলা ছাড়াই সময়মতো পৌঁছানো

কিছু দরকারী টিপস

  • আগেভাগে টিকিট বুক করুন, বিশেষ করে ছুটির সময়।
  • শীতকালে বার্থ বা এসি কোচ সুবিধাজনক হয়।
  • পরিবার বা শিশু নিয়ে গেলে স্নিগ্ধা বা এসি সিট উপযুক্ত বিকল্প।

সম্পর্কিত প্রশ্নোত্তর (FAQ)

প্রশ্ন ১: কক্সবাজার থেকে ট্রেন কখন ছাড়ে?
উত্তর:
কক্সবাজার থেকে ঢাকা রুটে দুপুর ১২:৩০ মিনিটে এবং চট্টগ্রাম রুটে সকাল ৭:২০ মিনিটে ট্রেন ছাড়ে।

প্রশ্ন ২: ট্রেনের টিকিট কবে থেকে কাটতে পারি?
উত্তর:
সাধারণত ৫ দিন আগ থেকে টিকিট কাটতে পারবেন অনলাইন বা স্টেশন কাউন্টারে।

প্রশ্ন ৩: এসি বার্থ কী ধরনের আসন?
উত্তর:
এটি শোবার জন্য নির্ধারিত, আলাদা কেবিন বা বার্থ সিস্টেম—সবচেয়ে আরামদায়ক।

প্রশ্ন ৪: পরিবারের জন্য কোন শ্রেণি উপযুক্ত?
উত্তর:
যদি আপনি আরাম চান, তবে স্নিগ্ধা বা এসি সিট উপযুক্ত। শিশু ও বয়স্কদের জন্য এসি বার্থও ভালো বিকল্প।

প্রশ্ন ৫: ট্রেনে খাবার পাওয়া যায় কি?
উত্তর:
নির্দিষ্ট ট্রেনে ক্যাটারিং সার্ভিস থাকে, তবে আপনি চাইলে নিজেও খাবার সঙ্গে নিতে পারেন।

প্রশ্ন ৬: কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার জন্য কি অন্য কোন ট্রান্সপোর্ট সুবিধা আছে?
উত্তর:
কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার জন্য ট্রেন ছাড়াও বাস, মিনিবাস, বা প্রাইভেট গাড়ি ব্যবহার করা যায়। তবে, ট্রেনের যাত্রা একটি আরামদায়ক এবং সাশ্রয়ী উপায় হিসেবে জনপ্রিয়।

কক্সবাজার টু চট্টগ্রাম ট্রেন সার্ভিসটি এখন পর্যটকদের জন্য একটি সুবিধাজনক এবং আরামদায়ক পছন্দ। এছাড়া, ঢাকাতে যাওয়ার জন্যও একই ট্রেন সার্ভিস সহজলভ্য, যা সময় ও খরচের দিক থেকেও অনেক সুবিধাজনক। ট্রেনের ভাড়া, সময়সূচী এবং টিকিট বুকিং সম্পর্কিত তথ্য জানার মাধ্যমে আপনি সহজেই কক্সবাজার যাত্রার পরিকল্পনা করতে পারবেন।